মালেক ইকবাল।।
চারিদিক অন্ধকারে নিমজ্জিত। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ এর ঝলকানি। ছমছম শব্দে মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়ের দমকা হাওয়ায় সবকিছু প্রায় উড়ে যাচ্ছে । এরই মাঝে স্টেশনে পৌছালাম। ট্যক্সিকে বিদায় করে হাঁটতে শুরু করলাম। এক হাতে ট্রাভেল ব্যাগ, অন্য হাতে ছোট্ট একটা ব্যাগ এবং পিঠে ঝোলানো আরেকটা ব্যাগ। পুরাই যেন আপাদমস্তক ভ্রমনকারী। মাথার ওপর টপ টপ করে পানি পরছে। গায়ে একটা টি শার্ট তার ওপরে হাল্কা মোটা শার্ট। বোতামগুলা সব কয়টা খোলা। মাঝে মাঝে শার্ট মাথার উপরে তুলছি বৃষ্টি থেকে নিস্তারের জন্য। ষ্টেশনে গিয়ে একটু ভয় পেলাম। চারিদিক শুনশান নিরবতা। শুধু বৃষ্টির টাপুর টুপুর শব্দ। কোথাও কেউ নেই। স্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম মধুমালা এক্সপ্রেস ট্রেন কখন আসবে? উনি আমার কথা না শুনে জিজ্ঞেস করলেন – কি বলছেন, শুনতে পাচ্ছি না বৃষ্টির শব্দে, এক্টু জোরে বলুন, প্লিজ।
-মধুমালা এক্সপ্রেস ট্রেন কখন আসবে?
উচ্চস্বরে বললেন- বৃষ্টির কারণে ট্রেন ৪/৫ ঘন্টা দেরী হবে।
অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। স্টেশনের মাঝখানে ডিম লাইট জ্বলছে। বেঞ্চে বসে আছি। দমকা বাতাসে ব্যাগ ধরে রাখতে পারছি না। একটা ঠিক করছি। আরেকটা ব্যাগ বাতাসে দূরে যাচ্ছে। শীতে খুব করে কাপছি। ব্যাগে হেডফোন খুঁজে পেলাম না। আবার তন্নতন্ন করে খুঁজলাম। তবুও পেলাম না। মাথা পুরাই নষ্ট। এই শীতে একা একা বসে আছি। গান না শুনলে কিভাবে এত সময় পার করবো? এসব চিন্তার মাঝেই বিদ্যুৎ এর ঝলকানিতে দূরে এক জনকে আবিষ্কার করলাম।
কালো রঙের কাশ্মীরি শাল মাথায় দিয়ে শীতে জুবুথুবু হয়ে বসে আছে। সাথে ব্যাগ। বাম হাতে মাথার ওপর কালো রঙের ছাতা। পায়ের হিল মাটি থেকে দুই ইঞ্চি ওপরে। তার নিচ দিয়ে বৃষ্টির পানি বেয়ে যাচ্ছে। আমি চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলাম- আরে ভাই, ও ভাই, আপনার কাছে কি হেডফোন আছে? আরও কয়েক বার জিজ্ঞেস করলাম। তবুও কোন উত্তর পেলাম না। মনে হয় ঝড় বৃষ্টির শব্দে শুনতে পাচ্ছে না। একটু কাছে যেতেই ঝড়ো বাতাসে শালের ঘোমটা মাথা থেকে পড়ে গেল। আমি তো দেখে বিস্মিত না হয়ে পারলাম না। এত রাতে এখানে একা একা কি করছে? আমি আরেকটু কাছে গিয়ে বললাম- প্লিজ, মাইন্ড করবেন না। আমি মনে করেছি, আপনি কোন ছেলে মানুষ। এই জন্য বারবার হেডফোন চাচ্ছি। আমার আবার একা থাকলে গান না শুনলে ভাল লাগে না। আচ্ছা আপনার কাছে কি কোন হেডফোন আছে?
কোন উত্তর না দিয়ে আমার কথা শুধু শুনছে। পলক নামানোর বালাই নাই। আমিও চেয়ে থাকলাম। এত সুন্দর হওয়ার কী দরকার ছিল? ঠোঁট দুটো স্নো হোয়াইটের মতো। শীতে ঠোঁটে ঠোঁট ধাক্কা খাচ্ছে। সেই শব্দ আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি। তার গাল বেয়ে বৃষ্টির পানি চুয়েচুয়ে পড়ছে। স্কিনটা এত সফট যে চামড়ার নিচে কালো নীলচে রঙের দাগ দূর থেকে দেখা যাচ্ছে। ঠোঁটের কোণায় পানির একটি বিন্দু লেপ্টে আছে। সেটা বাতাসে উড়ে যেতেই সেখানে একটি ছোট্ট তিল দেখতে পেলাম। মাঝে মাঝে তার ফেসের উপর বিদ্যুৎ এর ঝলকানি পড়ছে। তার ফেসের আলোতে সমস্ত স্টেশন আলোকিত হচ্ছে।
দেখে তো এই পৃথিবীর কেউ মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে জান্নাতের অপ্সরা। কিছুক্ষণের জন্য ছুটি নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। সেও এবার পাপিষ্ঠ পৃথিবীর পাপে চমকে উঠছে। শীতের প্রতি প্রচুর রাগ হলো। মনে হলো শীত অতি অবিবেচক। এই অপ্সরাকে এইভাবে কষ্ট দেওয়া কি ঠিক হচ্ছে তার?
আমাকে দেখে চাদরে নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করছে। মাথাটা সম্পুর্ণ ঘোমটা দিয়ে ঢেকে ফেলল৷ দুই হাত দিয়ে ব্যাগগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করছে। হঠাৎ ঝাপটা বাতাসে চাদরটা খানিক দূরে গিয়ে পড়লো। আমি গিয়ে শালটা আনতেই কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে নিজেকে ঠিক করে নিল। তাকে বললাম- আমি কি একটা প্রশ্ন করতে পারি? কোন কথা না বলে আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলেন। আচ্ছা আপনি যেটা পরেছেন, এটা তো কখনও দেখিনি। এ রকম আলখেল্লা টাইপের জিনিস কেন ব্যবহার করেছেন? আপনি কি এই পৃথিবীর অধিবাসী? আপনি কোথায় যাবেন?। কোন উত্তর না দিয়ে চুপচাপ থাকলেন। হঠাৎ প্রশ্ন করলেন- আপনি কি আমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন?
আমি আমতা আমতা করে বললাম- কই, নাতো?
-তাহলে এভাবে বর্নণা করলেন কেন? আরও ভালভাবে বর্নণা করতে পারতেন। আচ্ছা, একটা প্রশ্ন করি?
– জ্বি করুন।
-এখন কি বৃষ্টি হচ্ছে?
-জ্বি, হচ্ছে।
-না, বৃষ্টি হচ্ছে না। পৃথিবীর সবাই বললেও আমি এটাকে বৃষ্টি বলব না। আমি কি বলব জানেন?
-না!
– আমি বলবো পৃথিবী অঝোরে কান্না করছে। পৃথিবী খুব কষ্ট পেলে কান্না করে আর তখনই বৃষ্টি হয়। লজ্জা করছে না, পৃথিবীর কান্নার সময় গান শুনতে! আপনি কি কখনও পাহাড়ে গিয়েছেন?
-জ্বি, গিয়েছি।
– ঝরনা দেখেছেন?
– দেখেছি।
-আপনিও তাহলে অবোধ এর মতো পাহাড়ের কান্নাকে ঝরনা বলে মজা নিয়েছেন। আপনারা মানুষ কতটা নিচু দেখেছেন? অপরের কান্না নিয়ে মজা করেন। পাহাড়ের অশ্রু দিয়ে নিজেদের পরিস্কার করেন। অপরের ভালো দেখতে পারেন না। প্রচন্ড লোভী। অন্যের ভালোতে হিংসে করেন। আর স্বার্থের জন্য অপরকে প্রশংসা করেন। এখন পৃথিবী কান্না করছে কেন, জানেন?
-আমি ক্যাম্নে বলি?
-পার্বতী এক্সপ্রেস এবং মধুমালা এক্সপ্রেস এর মধ্যে একটা সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পৃথিবী কান্না করে এই সংঘাতটা থামিয়ে দিলো।
-তাহলে সব দুর্ঘটনাই তো পৃথিবী কান্না করে থামিয়ে দিতে পারে?
– মানুষ কেন আত্মহত্যা করে? বলতে পারবেন?
– অনেক কারণে করতে পারে।
-উত্তরটা পরে বলছি। একজন মানুষ যখন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তখন সে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলে। কেউ আত্মহত্যায় সফল না হলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া উচিৎ। কারণ সে মরে গেলেই বেঁচে যাবে। পার্বতী এক্সপ্রেস এর খাবার বগিতে গোলা বারুদ আর আগ্নেয়অস্ত্র আছে। পশ্চিম থেকে আসছে। তাদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। এজন্য দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছে। তারা দুই পক্ষের কাছেই এই অস্ত্র বিক্রি করেছে। আর এই ব্যবসার মধ্যস্থতা করেছে দুই পক্ষের দুই বিশ্বাসঘাতক। তার মানে মানুষই মানুষের ধংসলীলায় ব্যস্ত। তবে এক সময় ঈশ্বর তার পৃথিবী ফেরত চাইবে! কি হল এত পরমাণু বোমা, হাইড্রোজেন বোমা বানিয়ে? আমেরিকার বি-স্টেলথ বোমারু বিমান নাকি আলপিনের ডগায় বোমা ফেলতে পারে কয়েক কিলোমিটার উঁচু থেকে! রাশিয়ান S400 মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম নাকি পৃথিবীকে কয়েক চক্কর কেটে ফেলার ক্ষমতা রাখে। AK107 রাইফেল নাকি আস্ত ট্যাংক উড়িয়ে দেয় এক নিমেষে। মানুষ মারার কত আয়োজন, তাই না?
মনে আছে? সিরিয়ার সেই ৩ বছরের ছেলেটির কথা? বোমায় ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে মরে যাবার আগে যে বলেছিল -“আমি ঈশ্বরকে সব বলে দেব”। সে হয়তো ঈশ্বরকে সব বলে দিয়েছে। হয়তো বলে দিয়েছে -মানুষের পৈশাচিকতার কথা, লোভের কথা, অসভ্যতার কথা, নির্যাতনের কথা। মানুষ হয়ে মানুষ মারছে হাজারে হাজার, একে অপরকে ধ্বংস করার জন্য মারণাস্ত্র বানিয়েছে লক্ষ-কোটি। মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়ানোর জন্য তৈরি করেছে নানা গোপন আগ্নেয় অস্ত্র। ২০১৮ সালে পৃথিবীতে কেবলমাত্র যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য খরচ হয়েছে ১.৮২২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। মানুষ মারার নেশা নিজদের আধিপত্য বিস্তার আর শক্তিমত্তা প্রদর্শনের জন্য।
সাগরপাড়ে পরে থাকা আ্যালান কুর্দি এবং
কাঁটাতারে ঝুলতে থাকা ফেলানি তারা হয়তো সব বলে দিয়েছে ঈশ্বরকে। বলেছে সেই পাখিটির কথা যে আর আকাশে উড়তে পারে না। বলেছে সেই আকাশের কথা, যে আকাশ একদিন নীল ছিল। বলেছে সেই বাতাসের কথা, যে একদিন নির্মল ছিল। বলেছে সেই পৃথিবীর কথা, যে পৃথিবী একদিন সবার ছিল। এই সবার পৃথিবীকে মানুষ ভাগ করেছে ইচ্ছেমতো-ধর্মের নামে, দেশের নামে কিংবা ভাষার নামে শুধু নিজেদের স্বার্থে। মানুষকে মানুষ দূরে সরিয়েছে চামড়ার রং দিয়ে। গণতন্ত্রের নাম দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে এই পৃথিবীকে। ঈশ্বর তার পৃথিবী এবার ফেরত চাইবে। তিনি হয়তো শুনেছেন তাদের সব অভিযোগ! হয়তো শুনেছেন প্রকৃতির আর্তনাদ আর আহাজারি। শুনেছেন সেই পাখিটির কান্না, যে পাখিটি মানুষের বুলেটের আঘাতে তার বাচ্চাকে খাবার খাওয়াতে পারে নি। এটাই হয়তো ঈশ্বরের মার কিংবা প্রকৃতির প্রতিশোধ। বৈভবে মোড়া দুবাই-এর ৮২৮ মিটার উঁচু মিনারের বুর্জ খলিফা খাঁ খাঁ করেছিল করোনায়। সোনা আর পেট্রো ডলারে মুড়ে রাখা অহংকার থরথর করে কেঁপেছিল মৃত্যুভয়ে।
একদিন হয়তো সব ঠিক হবে, কিন্তু তোরা কি সত্যিই মানুষ হবি? এই অন্তহীন প্রশ্ন ভবিষ্যতের জন্য রেখে আজও অন্তত বাঁচার স্বপ্ন দেখবি। কিন্তু বাঁচতে পারবি না। প্রকৃতির কাছেই হবে অসহায় আত্মসমর্পণ। তখনই ঈশ্বর তার পৃথিবী ফেরত চাইবে।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জিজ্ঞেস করলাম- কিন্তু কেন এসব?
-ওই তো, নিজেদের স্বার্থে আর ক্ষমতা প্রদর্শনীর জন্য। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ব্যবসা ভালোই চলছে। সমগ্র বিশ্ব থেকে শোষণ করে নিচ্ছে নিজেদের ফায়দা এই ধ্বংস নামক ব্যবসায়। যেখানে লাভ করা যায় কয়েক গুন! টুইন টাওয়ারের মতো বুর্জ খলিফা ধ্বংস হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
আশ্চর্যের সাথে জিজ্ঞেস করলাম- কেন ধ্বংস হবে?
-ওই তো ব্যবসার মুনাফার স্বার্থে! তবে তার আগে মালিকানা পরিবর্তন হবে। যেমন মেডিসিন ব্যবসায়ীরা আগে পানি এবং খাদ্যের ব্যবসা করে। তারপর ওষুধ কোম্পানি চালু করে।
-কিন্তু কেন?
-এই কিন্তু বুঝতে হলে ভালো ছাত্র না, মেধাবী ছাত্র হতে হয়। এই জন্য বর্তমান পৃথিবীর নেতারা মেধাবী ছাত্র তৈরি না করে ভালো ছাত্র তৈরির কারখানা চালু করেছে। যখনই তারা ন্যায় এবং অধিকারের কথা বলবে তখনই তাদেরকে রাস্তায় কুকুরের মতো গুলি করে হত্যা করা হবে। তারা হবে পথের প্রভুহীন কুকুরের মতো। চাটুকার আর স্বার্থপর নেতারা তাদের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারবে। একটা সিস্টেম তাদের এমন একটা সিস্টেম করে রাখবে এবং সেই সিস্টেমটা একদিন তাদেরকে এমন একটা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করবে যেখানে তারাই হবে তাদের প্রতিপক্ষ।
-বুঝলাম বিষয় টা!
– আজকে আর সময় নেই। আমাকে যেতে হবে।
এই বলে ঘোমটা থেকে মুখ বের করে শীতে কাপতে কাপতে আমাকে বলল- এক কাপ গরম চা।
এ কথা শুনে আমি অবাক হয়ে বললাম- অকে, প্লিজ দুই মিনিট। আমি চারপাশে চায়ের দোকান খুঁজতে শুরু করলাম। এক্টু দূরে গিয়ে একটা চায়ের দোকান খুঁজে পেলাম। কিন্তু বন্ধ। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। হঠাৎ দেওয়ালের ফাঁকা দিয়ে কুপির আলো দেখে ডাকা শুরু করলাম- আরে ভাই, আরে চাচা, উঠুন। কয়েক বার ডাকতেই ঘুমের মাঝে বলছে- পানি গরম নেই। এখন চা হবে না।
-ঠিক আছে চাচা, সমস্যা নেই। পানি আমি গরম করে নিবো। আপনি শুধু উঠুন।
আমার আগ্রহ দেখে চা বানানো আরম্ভ করলেন। এরই মাঝে ট্রেনের হুইসেল বাঁজতে শুরু করল। চাচাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম – এটা কোন ট্রেন ছাড়লো। উনি বললেন – পার্বতী এক্সপ্রেস। আমি এক কাপ গরম চা হাতে দৌড়ে ৫ নম্বর প্লাটফর্ম এ দাঁড়ালাম। টপটপ কিরে বৃষ্টির ফোটা চায়ের কাপের মধ্যে পড়ছে। আর আমার সামনে দিয়ে পার্বতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি খটখট শব্দে চলে যাচ্ছে।
আমি ব্যকুল হয়ে উনাকে খুঁজছি। হঠাৎ দেখি উনি জানালা দিয়ে ফ্যালফ্যাল করে অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। আমার চোখের ওপর চোখ পড়তেই জিজ্ঞেস করলাম – এই, আপনার গরম গরম এক কাপ চা!
উত্তরে কিছু না বলে শুধু আমার দিকে একটা চিরকুট ছুড়ে দিলেন। আলোর ঝলকানি আর স্ফুলিঙ্গের মতো রেললাইনের মধ্যে পড়লো। খুব ভয় পেয়ে গেলাম। কোতুহলী হলাম যে চিরকুটের মধ্যে কি লেখা আছে! রেললাইনের নিচে নামতেই এক ঝাপটা বাতাসে খানিকটা দূরে চলে গেলো। ঘুটঘুটে অন্ধকারে মধ্যে শুধু চিরকুটটাই জ্বলজ্বল করছে। খুব সাহস নিয়ে কাছে গিয়ে সেটা হাতে নিলাম। চিরকুট টা এক্সরিক্স ভাষায় লেখা। গুগল ট্রান্সলেটর এ চেক করলাম। বাংলা ভাষায় সেটার অর্থ হলো- “আমি বেঁচে থাকলে চা খেতাম।”
লেখক- মালেক ইকবাল, প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা।